ছবি সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক : দেশে এইচআইভি সংক্রমণের উদ্বেগজনক বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ইউএনএইডস (এইচআইভি/এইডস সংক্রান্ত যৌথ জাতিসংঘ কর্মসূচি)।
ইউএনএইডস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. সাইমা খান ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির কথা জানানোর পাশাপাশি এই ঝুঁকির জন্য ‘শিশুদের প্রতি সম্মিলিত অবহেলা’ এবং তাদের দুর্বলতার সময়ে সহযোগিতা করতে না পারাকে দায়ী করেছেন।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত কী-পপুলেশন (গুরুত্বপূর্ণ জনগোষ্ঠী) এবং পিএলএইচআইভি (এইচআইভি-তে আক্রান্ত ব্যক্তি)-দের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক পরিষেবা বিষয়ক জাতীয় কর্মশালায় এ তথ্য জানান তিনি।
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, শিশুদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এবং তাদের ওপর হওয়া নির্যাতনের কারণে তারা প্রায়শই যৌনকর্ম বা মাদকাসক্তির মতো পরিস্থিতিতে পড়ে যায়, যা তাদের এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকিকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তোলে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই গুরুতর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব অংশীজনকে ‘ঝুঁকিতে থাকা কী-পপুলেশন-এর পাশে দাঁড়াতে হবে’ এবং শিশুদের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে ঠেলে দেওয়া মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধান করতে হবে।
স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস), ইউএনএইডস এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ এই কর্মশালায় শিশু সুরক্ষা এবং সামাজিক পরিষেবা ব্যবস্থার মধ্যে এইচআইভি প্রতিরোধ ও যত্নের বিষয়গুলো কীভাবে একীভূত করা যায়, তা তুলে ধরা হয়।
ড. সাইমা খান এবং জাতীয় এইডস/এসটিডি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি ডিরেক্টর ড. জুবাইদা নাসরীন যৌথভাবে কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন। ডিজিএইচএস-এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ড. শেখ সাইদুল হক কর্মশালার উদ্বোধন করেন।
ইউনিসেফ বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসের শিশু সুরক্ষা বিভাগের অফিসার-ইন-চার্জ ড. এলিসা কালপোনা একটি নতুন পদ্ধতির তথ্য তুলে ধরেন। এই পদ্ধতিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিচালিত সামাজিক পরিষেবা কর্মী শক্তিশালীকরণ প্রকল্পে এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত শিশু সুরক্ষা কমিউনিটি হাবে এইচআইভি-সংবেদনশীল বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সম্মিলিত উদ্যোগের ফলে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং যশোরের মতো ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোতে কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ কী-পপুলেশনদের জন্য পরিষেবার পরিধি বাড়ানো সম্ভব হয়েছে, বিশেষ করে যারা রাস্তাঘাটে বা যৌনপল্লীতে থাকে। এই পরিষেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে এইচআইভি পরীক্ষা, স্ব-পরীক্ষা এবং প্রি-এক্সপোজার প্রফিল্যাক্সিস।
এইসব প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা হচ্ছে এমন নীতির মাধ্যমে যা পরিষেবা কেন্দ্রগুলোতে বৈষম্যহীনতা নিশ্চিত ও কমিউনিটি সংলাপ তৈরি করে। এছাড়া এইচআইভি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সাহায্য করার জন্য নগদ সহায়তা, পুষ্টি সহায়তা এবং দক্ষতা উন্নয়নের মতো সামাজিক সুরক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কর্মশালায় বক্তৃতা করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ প্রকল্পের মনিটরিং এক্সপার্ট মাহবুব হোসেন, ক্রীড়া অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) এস আই এম ফেরদৌস আলম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বিশেষ শিক্ষা শাখার সহকারি পরিচালক মো. খালিদ সাইফুল্লাহ এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের সিএসপিবি প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প পরিচালক মোহা. সাদিকুল হক।